সিলভেস্টার স্ট্যালোনের বিস্ময়কর কাহিনি | Inspiring Story of Sylvester Stallone

সিলভেস্টার স্ট্যালোনের অনুপ্রেরণামূলক কাহিনি


‘রকি সিনেমার মাধ্যমে সিলভেস্টার স্ট্যালোন খ্যাতি লাভ করেন। তবে স্ট্যালোনের নিজের গল্পও তার অভিনীত চরিত্রের মতো অনুপ্রেরণামূলক।

জন্মের সময় মুখ থেকে একটি স্নায়ু বা শিরা কেটে ফেলার পরিণতিই তার অস্পষ্ট কথাবার্তা এবং কর্কশ চেহারা, আর তার জীবনের শুরু সময়টা তার পোষ্য পরিবার আর নিউইয়র্কের মধ্য ম্যানহাটনের কুখ্যাত হেলস কিচেন এলাকায় আসা-যাওয়ায় কেটেছে। তার মুখের বিকৃতির কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে তার স্থান হয় শারীরিক বা মানসিকভাবে বিকৃত বাচ্চাদের স্কুলে যেখানে তাকে শাস্তি হিসেবে “বৈদ্যুতিক চেয়ারে স্থান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি” হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

স্কুল শেষ করার পর স্ট্যালোন শারীরিক সৌন্দর্য বর্ধন কলেজে ভর্তি হলেও পরে তিনি অভিনয়ে মনোনিবেশ করার জন্য কলেজ ছেড়ে চলে যান। তাতে তিনি খুব একটা সাফতার মুখ দেখেন নি। রকি সিনেমার পূর্বে তার জীবনের বিশের অধিকাংশ সময় তিনি চীনা স্টেশনারি প্রস্তুতকারি কোম্পানি ডেলিতে কাজ করেছিলেন।

সে সময় তিনি এতটাই অর্থ কষ্টে ছিলেন যে তিনি মাত্র ২৫ ডলারের বিনিময়ে বাধ্য হয়ে তার পোষা কুকুরটি বিক্রি করে ফেলেন, যার সাথে তিনি এতটাই আসক্ত ছিলেন যে তার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েছিল। তার স্ত্রীর গহনা বিক্রি করেও অবশেষে তার ঠাঁই কোনো এক বাস আশ্রয়কেন্দ্রে।

তার পরিবর্তন আসে যখন তিনি কোনো বক্সিং ম্যাচে গিয়ে দেখতে পান যে চাক ওয়েপনার এক নামে অপরিচিত বার বার হেরে যাওয়া এক বক্সার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ আলির সাথে ১৫ রাউন্ড পর্যন্ত খেলেন। স্ট্যালোন বাড়ি গিয়ে তিন দিনের মধ্যে ‘রকি সিনেমার প্রথম খসড়া লিখেন। এই ড্রাফ্ট বা খসড়া স্টুডিওতে প্রস্তাব নিয়ে গেলে তারা তাতে তাৎক্ষণিক আগ্রহ প্রকাশ করে। তারা তার এই পাণ্ডুলিপিকে রবার্ট রেডপোর্ড এবং বার্ট রেইনল্ড এর মতো বড় বড় তারকাদের মাধ্যম হিসেবে দেখতে পায়, এবং তারা তার কাছ থেকে পাণ্ডুলিপিটি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব করেন।

তবে, যতক্ষণ না তারা তাকে সিনেমাটির প্রধান চরিত্রটি দিতে রাজি না হচ্ছে ততক্ষণ তিনি তা তাদের বিক্রি করতে নারাজ ছিলেন। স্ট্যালোন যদি সিনেমাটিতে অভিনয় না করে তার বিনিময়ে তারা তাকে আরও বেশি অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব করে। প্রতিবারই স্ট্যালোন অর্থের প্রস্তাবকে নাকচ করে দেন, এমনকি যখন তারা তার পাণ্ডুলিপির জন্য সবচেয়ে বেশি অর্থ ৩২৫,০০০ ডলার প্রস্তাব করে তখনও। ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্টে মাত্র ১০৬ ডলার থাকার পরও স্ট্যালোন হাল ছাড়তে রাজি হননি।

স্ট্যালোন বলেন, “আমি জানতাম আমি টাকাটা নিলে আমাকে বাকি জীবন আফসোস করতে হতো। আর সিনেমাটি ছিল অবশেষে আপনার পাওয়া সেই সুবর্ণ সুযোগটি নেওয়ার সম্পর্কে।”

স্ট্যালোনকে কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই লেখক হিসাবে এবং পুরস্কার মজুরির জন্য অভিনেতা হিসাবে কাজ করার কাজ করতে হবে শর্তে স্টুডিওটি শেষ পর্যন্ত হার মানে আর পান্ডুলিপিটি ৩৫,০০০ ডলারের বিনিময়ে কিনে ছেড়ে দেয়। প্রধান চরিত্রটি স্ট্যালোন পান এবং সিনেমাটিকে কম বাজেট প্রোডাকশনের ছবিতে পরিণত করা হয়।

বাকিটা ইতিহাস। ‘রকি’ ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে, সিনেমাটি সেরা ছবির অস্কার জিতেছিল এবং স্ট্যালোন বনে যান এক বড় তারকা।

মুরাল: আমরা যাই হই বা দেখতে বা যোগ্যতাই যাই হই কেনো আমরা চেষ্টা করলেই আমাদের ভাগ্য বদলাতে পারি। তার আপনাকে আপনার সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আপনার সঠিক সময় কোনটি সে ব্যাপারে সচেতন থাকুন।


সূত্র: বক্সিং মাসিকের প্রতিবেদন। 

ইংরেজি থেকে অনুবাদ

The Searcher

Doing the right things by the right living with the right people in the right manner.

Post a Comment

Previous Post Next Post